
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নে অস্ত্র ও ছুরি নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছে ১০ জন ডাকাত সদস্য৷ পরবর্তীতে গণধোলাই দিয়ে র্যাবের হাতে তুলে দেয় গ্রামবাসী।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ১ টার দিকে ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিন নাঙ্গমোড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাদের থেকে ১ টি অস্ত্র, বেশ কয়েকটি দা-ছুরি উদ্ধার করা হয়। আটককৃত সকলে জানান তাদের বাড়ি লক্ষীপুর জেলায়, তারা ফেনী শহরের রামপুরা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতি করার উদ্দেশ্য ১২ জন সদস্য তিনটি সিএনজি নিয়ে এলাকায় আগে থেকে অবস্থান করছিল। সন্দেহজনক আচারণ মনে হওয়াতে এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়ে একটি দোকানে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে র্যাবের হেফাজতে তাদের তুলে দেয়া হয়েছে। এলাকার কারও যোগসাজশে এ প্রস্তুতি নিয়েছিল বলে দাবি করেন স্থানীয়রা৷ কে জড়িত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাকাত সন্দেহে ১০ জন লোককে গণধোলাই দিয়ে স্থানীয় একটি ফার্মেসীতে অবরুদ্ধ রাখা হয়। ডাকাত ধরা পড়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে শতাধিক এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী জড়ো হন এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। উত্তেজিত জনতা বাইরে বিভিন্ন লাঠিসোঁটা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে৷ পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে পুলিশ ও র্যাবের হাতে তুলে দেয়া হয়। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম।
স্থানীয় বাসিন্দা রায়হান উদ্দিন জানান, ১২ জন লোক ৩ টি সিএনজি নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছিল। তাদের আচারণ সন্দেহজনক মনে হওয়াতে জানতে চাইলে তারা জানান হারিয়ে যাওয়া সিএনজির খোঁজে তারা এসেছে। অন্যজন জিজ্ঞেস করাতে এলাকার মানুষদের সাথে গরম আচারণ দেখায়। এরমধ্যে তাদের কয়েকজন ভিন্ন ভিন্ন কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাদের সিএনজিতে অস্ত্রসহ দেশীয় দা ছুরি পাওয়া গেলে তাদেরকে আটকে রেখে গণধোলাই দেয়া হয়।এরমধ্যে ২ জন পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, তারা ডাকাতি করতে এসেছিল।কারন তাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া গেছে। বার বার মোবাইলে কার সাথে কথা বলছিল। কোন নেতার পরিচয় দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এলাকাবাসী তাদের আটক করে প্রথমে মারধর করে পরবর্তীতে স্থানীয় মুরুব্বিদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে আইনের আওতায় তুলে দেয়া হয়।
আশিক নামে আরেকজন জানান, তারা এলাকায় ঘুরোঘুরি করছিল। সিএনজি হারিয়ে গেছে বলে আমাদের জানায়। পরবর্তীতে আমরা তাদের কাচে জিডি কপি দেখাতে বলি কিন্তু তারা দেখাতে পারেনি বরং আমাদের সাথে গরম হয়ে যায়। তাদের আচারণ সন্দেহ হলে সিএনজিগুলো তল্লাশি করি, সেখানে অস্ত্রসহ ছুরি চাপাতি পাওয়া যায়। এরপরেই এলাকাবাসী সবাই একত্রিত হয়ে মারধর দিয়ে দোকানে আটকে রাখি৷ পরে পুলিশ আসলে গ্রামবাসী তাদের হাতে দিতে চায়নি, র্যাব আসার পর তাদের হাতে হস্তান্তর করি।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্য ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম বলেন এরা কেউই ফেনীর নয়। সবাই সিএনজি অটোরিকশা চালায়। এরমধ্যে একটি দল হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায় সুযোগ পেলে ডাকাতি করে লুটপাট করে। ফেনীতে এমন বেশ কয়েকটি গ্রুপ আছে যারা সংঘবদ্ধ হয়ে এমন কাজ করে। আমরা তাদের আটক করেছি, জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরবর্তীতে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা বের করা হবে।



