আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালই যেন অঘোষিত এক ফাইনাল। শেষ চারের রোমাঞ্চকর দ্বৈরথটা ছিল স্পেনের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সঙ্গে ফ্রান্সের জমাট রক্ষণের। জমজমাট সেই ম্যাচে ফ্রান্সকে হতাশায় ডুবিয়ে এক যুগ পর ফাইনাল নিশ্চিত করল স্পেন। সর্বশেষ ২০১২ সালে ফাইনাল খেলেছিল স্প্যানিশরা। ওই আসরে শিরোপাও জিতেছিল দলটি।
বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হওয়া চলমান ইউরোর সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পেন। প্রথমার্ধে ফরাসিরা আগে গোল করলেও ১৬ বছরের ইয়ামালের রেকর্ডগড়া গোল ও দানি অলমোর গোলে জয় পেয়েছে লা রোযারা।
ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালের ম্যাচ শুরুর আগেই অবশ্য বেশিরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞ স্পেনকে ইউরোর শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদার বলে মানছিলেন। তাদের হতাশ করেনি স্পেন, ১৬ বছর বয়সী লামিন ইয়ামাল তার অসাধারণ স্ট্রাইক দিয়ে ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হয়ে ওঠার ম্যাচে গোল পেয়েছেন দানি অলমোও।
অবশ্য ম্যাচে প্রথম আঘাত হানে ফরাসিরা। ফ্রান্স অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পে ক্রস থেকে রান্ডাল কলো মুয়ানির হেডের মাধ্যমে দ্রুত লিড নেয় ফরাসিরা। তবে ইয়ামাল ২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে চোখ ধাঁধানো এক গোল দিয়ে জবাব দেন। মাত্র ১৬ বছর ৩৬২ দিন বয়সে স্কোর করে তিনি হয়ে যান সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। ইয়ামালের গোলের চার মিনিট পরই স্পেন লিড নেয় যখন দানি ওলমোর শট ফ্রান্সের ডিফেন্ডার জুলস কুন্ডে ভুল করে নিজেদের জালে ঢুকিয়ে দেন।
প্রথমার্ধটি ছিল পুরোপরি উত্তেজনাপূর্ণ, তবে পুরো হাফেই ফরাসিদের স্প্যানিশদের পিছনে দৌড়াতে হয়েছে। স্পেনের প্রেসিংয়ের কোনো জবাব ছিল না তাদের কাছে, অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্স শক্তভাবে ফিরে আসে। অরেলিয়েন চুয়ামেনি একটি হেডার সেভ করান এবং এমবাপ্পে একটি বড় প্রচেষ্টা মিস করেন।
টুর্নামেন্টের শুরুতে নাক ভাঙার পর প্রথমবারের মতো মুখোশ ছাড়া খেলা ফ্রান্সের অধিনায়ক এমবাপ্পে শেষের দিকে দলকে সমতায় ফেরানোর বড় সুযোগ নষ্ট করেন, যা তার সাম্প্রতিক ফর্মকে প্রতিফলিত করে।
পুরো টুর্নামেন্টে আক্রমণাত্মক খেলার জন্য পরিচিত স্পেন, তাদের রক্ষণাত্মক শক্তিও প্রদর্শন করে এই ম্যাচে। তারা রেকর্ড চতুর্থ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপার পথে রয়ে গেল। ফ্রান্স স্পেনের রক্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্যর্থ হয়।
স্পেনের ফাইনালে পৌঁছানোর যাত্রা তাদের আধিপত্যের পরিচয় বহন করে, তারা পাঁচটি ম্যাচেই জিতেছে এবং টুর্নামেন্টে সর্বাধিক ১৩ গোল করেছে। তাদের উজ্জ্বল খেলোয়াড়দের মধ্যে নিঃসন্দেহে ইয়ামাল এবং ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার নিকো উইলিয়ামস শিরোনামে ছিলেন।
ইয়ামাল, যিনি এখনো ১৭ হননি, বার্সেলোনায় অসাধারণ একটি ব্রেকআউট সিজন কাটিয়েছেন, যেখানে তিনি তাদের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় এবং গোলদাতা হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার আত্মবিশ্বাস এবং শান্ত স্বভাব সেখান থেকেই এসেছে।
তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচে, ইয়ামাল অসাধারণ একটি সুইর্ভিং শট দিয়ে শীর্ষ কোণে গোল করেন। তার গোলটি প্রমাণ করে যে, তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হওয়ার সব গুণাবলী ধারণ করেন।