আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্ক: রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনো নারী তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই একা বসবাস করতে পারবেন। বিবাহিত, অবিবাহিত ও সেপারেটেড যে কোনো নারী চাইলে একা একাই নিজের পছন্দের বাড়িতে থাকতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজন হবে না স্বামী, বাবা ও অন্য কোনো পুরুষের অনুমতি। দ্য মক্কা সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে গালফ নিউজ।
দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের প্রচলিত নিয়ম ছিল, প্রত্যেক নারীকে একজন পুরুষের অধীনে থাকতে হতো। যিনি হবেন তার স্বামী, ভাই, ছেলে, বাবা অথবা চাচা। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পরামর্শে দেশটি ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে এসব বাধা তুলে দিচ্ছে সৌদি আরব।
২০১৯ সালের আগস্টে সৌদি আরব নারীদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই ২১ বছরের বেশি হলেই তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারছেন। ভ্রমণ করতে পারছেন ইচ্ছামতো পছন্দের জায়গায়। সম্প্রতি সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ দেশটির শরিয়াহ আইনের আর্টিকেল ১৬৯-এর বি ধারাটি বাতিল করেছে; যেখানে লেখা ছিল বিবাহিত, অবিবাহিত ও সেপারেটেড নারীদের তাদের পুরুষ অভিভাবকের অধীনস্থ থাকতে হবে।২০২০ সালের জুলাই মাসে সৌদি লেখিকা মারিয়াম আল-ওতাইবি তার বাবার অনুমতি ছাড়া একা ঘুরতে যেতে চাইলে তা আদালতে গড়ালে সেই মামলায় তার পক্ষে রায় দেওয়া হয়। নতুন এই নিয়ম প্রসঙ্গে সৌদি আইনজীবী নায়েফ আল-মানসি জানান, যদি কারও মেয়ে একা থাকতে চায়, সেক্ষেত্রে তার পরিবার এখন থেকে আর মামলা করতে পারবে না। অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা নারীরা এই সুযোগ পাবে।
সংশোধনী এই আইনে আরও বলা হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী কোথায় থাকবেন সেটা নির্ধারণ করার অধিকার তার রয়েছে। যদি কোনো নারী কোনো অপরাধ করে কেবল তখনই তার অভিভাবক এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারবে। এমনকি যদি কোনও নারীর কারাদণ্ড হয়, তবে সাজার মেয়াদ শেষে তাকে তার অভিভাবকের কাছে ন্যস্ত করার কোনো বিধান থাকছে না। সৌদি আরবে চালু থাকা অভিভাবক ব্যবস্থার আওতায় সরকারি সেবা পেতে কিংবা ভ্রমণে যেতে, স্কুলে ভর্তি হতে গেলে নারীকে তাঁর ‘অভিভাবকের’ কাছ থেকে পাওয়া অনুমতিপত্র দাখিল করতে হয়৷ এক্ষেত্রে অভিভাবক হন সাধারণত স্বামী, বাবা কিংবা ভাই৷
তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব৷ তাই সম্প্রতি বেসরকারি খাত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি৷ নারীদের ব্যবসা শুরুর অনুমতি দেয়া সেই পরিকল্পনারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে৷ভিশন ২০৩০’ নামে একটি সংস্কার কর্মসূচি শুরু করেছে সৌদি আরব৷ এর আওতায় কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ২২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট জনশক্তির এক-তৃতীয়াংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে৷
নতুন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ‘ভিশন ২০৩০’ প্রণয়নের মূল ব্যক্তি বলে মনে করা হচ্ছে৷ গত অক্টোবরে তিনি একটি ‘মধ্যপন্থি ও খোলা’ সৌদি আরব গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন৷এছাড়া বিমানবন্দর ও সীমান্তে প্রথমবারের মতো ১৪০ জন নারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল সরকার৷ এক লক্ষেরও বেশি নারী এতে আবেদন করেন বলে জানা গেছে৷
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান গাড়ি চালানো বিষয়ে নারীদের উপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন৷ আগামী জুন মাস থেকে তা কার্যকর হবে৷এছাড়া বিমানবন্দর ও সীমান্তে প্রথমবারের মতো ১৪০ জন নারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল সরকার৷ এক লক্ষেরও বেশি নারী এতে আবেদন করেন বলে জানা গেছে৷
এর আগে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান গাড়ি চালানো বিষয়ে নারীদের উপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন৷ যা কার্যকর হয়েছে৷