আজ মধ্যপ্রাচ্য সহ ইউরোপের দেশ গুলোতে পবিত্র ইদুল আযহা

এ,কে,আজাদ – আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্ক: লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষসহ মনের পশুকে পরাভূত করার বাণী নিয়ে আবারও এসেছে কোরবানির ঈদ। আজ শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্য সহ ইউরোপের দেশ গুলোতে পবিত্র ইদুল আযহা
উযযাপিত হচ্ছে।
ঈদের আনন্দে মাতবে সারাদেশ। তবে উৎসবের বাতাবরণে ভয় জাগাচ্ছে সারাদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাসের পাদুর্ভাব । বন্যায় প্লাবিত রয়েছে দেশের উত্তর মধ্যাঞ্চল। ক্ষত বিক্ষত আজ পুরোদেশ ও নতুন করে বন্যার পূর্বাভাস নিয়ে উদ্বেগ।

এই বছর সারা দুনিয়ায় রাজত্ব করে বেড়িয়েছে করোনা। করোনা আর বন্যার কারনে ঈদুল ফিতরের মতো কোরবানির ঈদের আনন্দময় অনিশ্চইয়তায়। নয় দিন আগেই পশ্চিম আকাশে জিলহজের চাঁদ জানান দিয়েছে কোরবানির বার্তা। বাংলাদেশের সমার্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহর পথে পশু কোরবানি করবেন।
সবাই সাধ্যমতো সেরা পশু কোরবানি দেবেন ঈদে। তবে এবার উৎসবের আমেজ ম্লান করে দিয়েছে মহামারি করোনা ভাইরাস। সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ৩৪৪ জনের প্রাণ গেছে করোনায়। সরকারি হিসাবেই আক্রান্ত হয়েছেন ২৩২৩০০ জন। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা পাচ লক্ষাধিক।করোনায় স্বজনহারা মানুষের ঘরে আসবে না ঈদের আনন্দ। উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অনেক মানুষের ঈদ মাটি হয়ে গেছে। আবার রাজধানী ঢাকা থেকে যারা নিজ নিজ এলাকায় গেছেন, তাদের ঈদের খুশি ম্লান করেছে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটসহ যাত্রাপথে নানা ভোগান্তি।
আল্লাহর জন্য ত্যাগই ঈদুল আজহার প্রধান শিক্ষা। পশু জবাই করে তা বিলিয়ে দেওয়া দান নয়, ত্যাগ। সামর্থ্যবানরা নিজেদের নামে, প্রিয়জনের নামে পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে সচেষ্ট হবেন। যাদের সামর্থ্য নেই তারাও বাদ যাবেন না ঈদের আনন্দ থেকে। কোরবানির মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করার বিধান রয়েছে ইসলামে। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হলেও পরের দু’দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ তারিখেও পশু কোরবানি দেওয়া যায়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে আগামী রবিবার ও সোমবারও কোরবানি করা যাবে।
বাংলাদেশে শনিবার সকালে পরিষ্কারর অথবা নতুন পোশাক পরে সব বয়সী মানুষ শরিক হবেন ঈদের জামাতে। এক কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আদায় করবেন ঈদের নামাজ। ভুলে যাবেন সব ভেদাভেদ। নামাজের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ অন্যান্য ময়দান ও মসজিদগুলো।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে। কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে। ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হলেই প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য।’
শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি শেখ হাসিনা, বছর ঘুরে আবার পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে এসেছে। আমি পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ সরকার প্রধান আশা প্রকাশ করেন যে, করোনাভাইরাস মহামারির সব অন্ধকার কাটিয়ে ঈদুল আজহা সবার মাঝে আনন্দ বয়ে আনবে। প্রধানমন্ত্রী ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও বিরোধী দলীয় নেতা তার বাণীতে বলেন, ‘শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয় ঈদুল আজহা। তাই আসুন, আমরা সকলে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির বেগম রওশন এরশাদ, জিয়াউদ্দিন বাবলুসহ বিভিন্ন দলের রাজনীতিকরা।

কোরবানির তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রগুলো। শনিবার থেকে তিন দিন বন্ধ থাকবে সংবাদপত্র। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ঈদ উপলক্ষে সাত দিনের বিশেষ বিনোদন অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে সরকারি উদ্যোগে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। শিশুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বিনোদনকেন্দ্রগুলো।

SHARE THIS ARTICLE