শাহ আজমান, ইউকে প্রতিনিধিঃ হাউজিং ফ্রড বা সরকারি আবাসন নিয়ে প্রতারণার মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন লন্ডনের বাঙালিপাড়া পপলার ও লাইমহাউস আসনের এমপি আপসানা বেগম। হউজিং জালিয়াতির মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর আদালতে কেঁদেছেন লেবার দলীয় এই এমপি।
পপলার এন্ড লাইমহাউস সংসদীয় এলাকার এমপি আপসানা বেগমকে আদালতের জুরি বোর্ড নির্দোষ ঘোষণা করার সাথে সাথে তিনি আদালতের কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শুক্রবার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর স্নেয়ার্সব্রুক ক্রাউন কোর্টের দর্শক গ্যালারিতে বসে থাকা দর্শকের একাংশ করতালি দিয়ে রায়কে স্বাগত জানান। এসময় বিচারক মিসেস হুইপল খুব দ্রুত আদালতে নীরবতা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।
আদালতে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত আনীত আবাসন জালিয়াতির অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক আপসানা। এই অভিযোগটি আনে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল, আপসানা বেগমকে সেই সময়ে ঘরের ব্যবস্থা করতে গিয়ে হউজিংয়ের তালিকায় থাকা অন্য আবেদনকারীকে বিকল্প স্থানে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। এই কাজে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ৬৩,৯২৮ পাউন্ড ব্যয় হয়েছিল। আপসানার বিরুদ্ধে কাউন্সিলকে অবহিত না করার অভিযোগ উঠে।
এর আগে গত ১ সপ্তাহ ধরে এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আপসানা মামলার শুনানি চলাকালীন সময়ে গত সোমবার আদালতে তার ব্যক্তিগত জীবনের বিষাদময় ঘটনা তুলে ধরেন। যেখানে তিনি বিশদ বর্ণনায় বলেন, কিভাবে পরিবার থেকে বিতারিত হয়ে পরে সাবেক স্বামী দ্বারা নির্যাতন ও প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন।
গত নির্বাচনে কনজারভেটিভ প্রার্থী শিউন ওককে প্রায় ২৯ হাজার ভোটে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হন লেবার পার্টির প্রার্থী আপসানা বেগম। এর আগে আপসানা ব্রিটেনের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে লন্ডনের সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বহুল এলাকা পপলার লাইমহাউস এলাকা থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেন। লেবার পার্টির নিরাপদ এ আসনটি থেকে মনোনয়ন পাওয়া মানেই অনেকটা নিশ্চিত বিজয়। যদিও মনোনয়ন যুদ্ধে খোদ বাঙালিদেরও বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে।
আপসানা জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসে হলেও বাংলাদেশে তার বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। আপসানার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর ছিলেন।