আমেরিকায় একদিনে কোভিডে আক্রান্ত হলেন ১০ লক্ষেরও বেশী মানুষ

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ গত সোমবার একদিনে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড ভাইরাসে নূতন করে সংক্রমিতের সংখ্যা অতীতের বিশ্বের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে এক বিস্ময়কর অবস্থান গ্রহণ করেছে।

ইউএসএ টুডে এবং জন হপকিনস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কেবল গত সোমবার একদিনে ১০ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৪৯ জন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর কোনো দেশে আর কখনও এক দিনে এর অর্ধেক রোগীও শনাক্ত হয়নি। সোমবার শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা এর আগের রেকর্ডের প্রায় দ্বিগুণ। চার দিন আগে ৫ লাখ ৯০ হাজার রোগী শনাক্তের সেই রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রেই হয়েছিল।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংক্রমণের এই সুনামি মার্কিন নাগরিকদের জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রকে বিপর্যস্ত করে ফেলছে।কেবল সোমবারই তিন হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, স্কুল আর অফিস বন্ধ করে দিতে হচ্ছে অনেক এলাকায়। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় বাজার পরিস্থিতি নিয়েও শঙ্কা জাগছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে।

Why daily death tolls have become unusually important in understanding the  coronavirus pandemic


বিগত সকল সময়ের পরিসংখ্যানের তুলনায় হাসপাতালে কিংবা আই সি ইউতে ভর্তি কিংবা মৃত্যু তূলনামূলকভাবে কম হলেও শনাক্তের এই আকাশচুম্বী অবস্থান এক ভয়াবহ শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। অমিক্রনের এই দুর্দান্ত সংক্রমণের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ৯০% বেশী আই সি ইউ শয্যা পরিপূর্ন হয়ে গেছে বলেও জানা গেছে। বিগত ২৮ দিনে আমেরিকায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৬,৪০০ জন। এই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ। শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩৪ লক্ষ। আমেরিকায় ৬৩% মানুষ ইতিমধ্যে টিকা গ্রহণ সম্পন্ন করেছেন কিন্তু এই মুহূর্তে পি সি আর টেস্টের অপ্রতুলতা দেখা যাচ্ছে।

এদিকে আয়ারল্যান্ডে গতকাল সোমবার এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ২১,৩০২ জন। ৮৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। আই সি ইউতে আছেন ৯০ জন রোগী। এই সপ্তাহে খুলছে স্কুল সমূহ। জনমনে উদ্বিগ্নতা প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে পি সি আর টেস্ট অপ্রতুল থাকার কারণে ৭২ঘন্টার বেশী সময় অপেক্ষা করোতে হচ্ছে যার কারণে পরিসংখ্যানের প্রকৃত সংখ্যা আসছে না। স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা চাপের মুখে। এই অবস্থায় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। মাস্ক পরিধান করা, যতটুকু সম্ভব ঘরে থাকা, হাত ধোয়া অব্যাহত রাখা এবং সর্বোপরি টিকাগ্রহন সম্পুর্ন করা এই মুহূর্তে অন্যতম কাজ।

সারা বিশ্বব্যাপী অমিক্রনের আক্রমণের এক বন্যা চলছে। কোথায় গিয়ে এর শেষ হবে তা এখনো কেউ ভাবতে পারছেন না। আশার কথা হচ্ছে টিকা আবিষ্কার হয়েছে। ধনাঢ্য দেশের অধিকাংশ মানুষ টিকা পেয়ে বেঁচে থাকছেন। দরিদ্র বিশ্ব টীকা প্রদানে পিছিয়ে আছে, সেখানে অমিক্রনের থাবায় কি হয় সেটা দেখার জন্য বেঁচে এবং জেগেও থাকতে হবে সভ্যতাকে।

SHARE THIS ARTICLE