
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার সকালে ইউরোপের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করছেন। পৃথিবীকে আবহাওয়া দূষণের বিপদ থেকে রক্ষা করার রূপরেখা নিয়ে প্রথমে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ৯ থেকে ১৩ই নভেম্বর ফ্রান্স সফর করবেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু ও ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্যাপনের সভায় যোগদান ছাড়াও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্যানটেক্সসহ দেশ দুটির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন।

আজ রবিবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ বিমানে সফরসঙ্গীদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩১শে অক্টোবর থেকে ১২ই নবেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স অব পার্টিজের ২৬তম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
১লা ও ২রা নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের শীর্ষ বৈঠকসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন। ১লা নভেম্বর কপ-২৬-এর শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিন সিভিএফ কমনওয়েলথের একটি যৌথ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবেও অংশ নেবেন তিনি। জলবায়ু সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্বন নিঃসরণের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য কী কী করা প্রয়োজন সে বিষয়ে কথা বলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সফরকালে পহেলা নবেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ‘এ্যাকশন এ্যান্ড সলিডারিটি দ্য ক্রিটিকাল ডিকেইড’ শীর্ষক এক সভায় অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ২রা নভেম্বর ওম্যান এ্যান্ড ক্লাইমেট শীর্ষক সভায় তিনি অংশ নেবেন। এছাড়া সিভিএফ সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অধিকার আদায়ে বলিষ্ট ভূমিকা রাখবে।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সিভিএফ-কপ-২৬ লিডার্স ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, জলবায়ু অভিযোজন ও অর্থায়নের লক্ষ্যে আহ্বান জানিয়ে ঢাকা-গ্লাসগো ডিক্লারেশন গৃহীত হবার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে ‘এ কল ফর ক্লাইমেট প্রোসপারিটি’ শীর্ষক বক্তব্য দেবেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পাশাপাশি তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, প্রিন্স অব ওয়েলস ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ থেকে ৮ই নবেম্বর লন্ডনে থাকবেন। এ সময় তিনি শহরের ওয়েস্ট মিনিস্টারে দেশটির সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ড কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৯ থেকে ১৩ই নবেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্স সফর করবেন। এই সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। বেশ কিছু ফরাসি প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ এমইডিএইএফ-এর প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময় বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও লেটার অব ইনটেন্ট সই হতে পারে। এছাড়া আগামী ১২ই নবেম্বর ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনে উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বজনীন আদর্শ তুলে ধরার পাশাপাশি জাতিসংঘের টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদসূত্রঃ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকা, দৈনিক জনকণ্ঠ