দেশে ওমিক্রন নিয়ে কাগজে-কলমে সতর্কতা থাকলেও বাস্তব চিত্র তার উলটো

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ফুটপাতে সারি সারি দোকান। ছুটির দিনে দম ফেলার সুযোগ নেই যেন। গায়ে গা লাগা মানুষের ভিড়। রাজধানীর নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব এলাকাজুড়ে কেবল মানুষ আর মানুষ।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) নিউমার্কেট এলাকার গাউসিয়ায় সকাল সাড়ে ৯টায় গিয়ে দেখা যায় তিল ধারনের ঠায় নেই। ফুটপাতের দোকানে কেনাবেচা চলছে দেদারসে। যে কোনও ঈদের বাজারের মতোই।

গত ঈদের সময়ে এসব এলাকায় গেলে ভিড়ের মধ্যে মাস্কহীন লোক দেখা যেতো হাতে গোনা। আর এখন অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরেন না। আবার মাস্ক পরা কোনও ব্যক্তি মাস্কহীন কাউকে দেখলে সচেতন করার যে চল শুরু হয়েছিলো সেগুলোও অনুপস্থিত।

261590962_486488202808596_1442871512208782989_n(1)

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশে এখনও কোন বাড়তি সতর্কতা লক্ষ্য করা যায়নি। ইতোমধ্যে প্রবাসীদের মাধ্যমে কিছু সংক্রমণ ঘটার শঙ্কা দেখা দিলেও নতুন করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা বা সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নির্দেশনা দিতে দেখা যায়নি। ফলে এখন পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে চোখে পড়ার মতো কোনও সতর্কতা নেই।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওমিক্রন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ এর পর এবার ‘নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস’ ক্যাম্পেইন চালুর কথা ভাবছে সরকার।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই বছর ধরে চলা করোনাভাইরাসের যে উপসর্গগুলো আমাদের চেনা হয়েছে, তার সঙ্গে নতুন ভ্যারিয়েন্টের খুব একটা মিল নেই। জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে মানুষ পরীক্ষা করাতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু নতুন ভ্যারিয়েন্ট উপসর্গ ছাড়াই বাসা বাঁধছে মানুষের শরীরে।

তবে আশার বিষয় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) একটি সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থাটির প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়েছে। তবে মিউটেশন বেশি হলেও এটা কতটা মারাত্মক তা এখনও স্পষ্ট নয়।

263416884_1251063035414982_3262370933939453892_n(1)

হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ওমিক্রন ইতোমধ্যে ভারতে চলে এসেছে। শ্রীলঙ্কাতেও এর সংক্রমণ ঘটেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এমন দেশগুলোতে এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে মানে যেকোন সময় আমাদের দেশেও এর উপস্থিতি পাওয়া যেতে পারে। ডেল্টার ক্ষেত্রে যেটা দেখেছিলাম সতর্কতার দশদিন পরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ফলে ডেল্টা এসে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছিলো। সুতরাং কালক্ষেপণ করা হলে আবারও সেরকম অবস্থা দাঁড়াতে পারে। আমাদের কোনওরকম কালক্ষেপণ না করে যাবতীয় সতর্কতা বাস্তবায়নের জন্য অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে তাদের জন্য দুই সপ্তাহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টাইন বাধ্যতামূলক করা দরকার। দেশের অভ্যন্তরে আবারও মাস্ক ব্যবহারে জোর দিতে হবে।

SHARE THIS ARTICLE