যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসিফ মুক্তাদিরঃ জীবনে সফলতা অর্জন করতে কে না চায়? সফলতা অর্জনের জন্য শৈশব থেকে আমরা নানা পরিকল্পনা করে থাকি। তবে যতই পরিকল্পনা গ্রহন করি না কেন সফলতা অর্জনের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো পরিশ্রম করা। কোন কিছু অর্জনের জন্য ধৈর্য্য ধরে এর পেছনে লেগে থাকা, অধ্যবসায় করা অত্যাবশ্যক। নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করা প্রয়োজন।
পরিশ্রম করে কোন কিছু অর্জনের অভ্যাস আমাদের শৈশব থেকেই গড়ে তোলা উচিত। কেউ যদি শৈশবে স্বপ্ন দেখে পঞ্চম শ্রেণীর সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবে কিন্তু ঠিকমতো পড়াশোনা না করে তাহলে তার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থাকবে। পক্ষান্তরে, অন্য কেউ একই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ঠিকমতো পড়াশোনা করলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। দিনশেষে আমরা সফলতা ও ব্যর্থতা দেখতে পেলেও সেই ফলাফলের পেছনে একজনের দিন রাত পরিশ্রম আর অন্যজনের গাফিলতি অনেকাংশই দেখতে পারি না। জীবনে যারা সফলতা অর্জন করেছেন তারা প্রত্যেকেই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে, নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে অধ্যাবসায় করেছেন।
ভুল করে কেউ এভারেস্ট জয় করে ফেলে না। আন্দাজে কেউ বিসিএস এ টিকে যায় না। হুট্ করে কেউ হায়ার স্টাডি এর স্কলারশিপ পেয়ে যায় না। দুই-তিন সপ্তাহ পড়ে কেউ ক্লাসে প্রথম হয়ে যাবে না। কারণ প্রেস্টিজিয়াস কোন কিছুই সহজ না। সহজ কোন কিছুই প্রেস্টিজিয়াস না।
সেজন্যই লাইফটাকে সিরিয়াসলি পরিবর্তন করতে চাইলে, লাইফের একটা সময়, প্রেস্টিজিয়াস একটা গোল সেট করে সেটা অর্জনের জন্য হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হবে। সবকিছু থেকে নিজেকে ডিসকানেক্ট করে বন্ধ ঘরে সাধনা চালাতে হবে। হিট মুভি, হট নিউজ, ফাটাফাটি খেলা, কাটাকাটি ভাইরাল, এগুলা এক একটা ডিস্ট্রাকশন। টার্গেট এচিভ না হওয়া পর্যন্ত এগুলাকে কন্ট্রোল করতে হবে, ইগনোর করতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে একরোখা হতে হবে। ক্রেজি লেভেলের হার্ডওয়ার্ক করতে হবে।
.
যেদিন ফল খেতে চায়, সেইদিন মাটিতে বীজ লাগালে কাজ হবে না। কারণ একরাতে বীজ থেকে গাছ হয়ে ফল দিবে না। একরাতে কেউ বিগিনার লেভেল থেকে এক্সপার্ট হয়ে যাবে না। আধা বেলা গুঁতা মেরে, একটা জিনিসে ভালো হয়ে যেতে পারবে না। কোন কিছুতে ভালো হতে হলে: লেগে থাকতে হবে। সাধনা করতে হবে। এফোর্ট দিতে হবে। লাইফে গ্যাঞ্জাম, ঝামেলা, সমস্যা আসবেই। হুট করে ইস্যু এসে হিসু করে দিবেই। সেগুলাকে ম্যানেজ করে, পাশ কাটিয়ে, সম্ভব হলে ইগনোর করে নিজের টার্গেটে এফোর্ট দিতে পারলেই– একটা সময় পর কম হোক, বেশি হোক: কিছু না কিছু একটা হবে।
.এইটা সারা জীবন এর ফর্মুলা না। সারাজীবন, ক্রেজি লেভেলের হার্ডওয়ার্ক চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে, জাস্ট ছয়টা মাস বা একটা বছর এ নিজের ভার্সন আপগ্রেড করার জন্য, নিজেকে নেক্সট লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য, পরবর্তী মিশন কিংবা টার্গেট কিংবা ড্রিম এচিভ করার জন্য–কিছুদিন ক্রেজি হতেই হবে। কারণ, টপক্লাস এফোর্ট না দিলে, টপক্লাস এচিভমেন্ট আসবে না। সারা জীবন অন্যের গোল দেয়া কিংবা অন্যদের গোল খাওয়া সেলিব্রেট করে নিজের পেট ভরবে না। নিজের এচিভমেন্ট সেলিব্রেট করতে চাইলে: প্রথমে এফোর্ট, তারপর এচিভমেন্ট, এরপর এনজয়।
.সেজন্যই লাইফের ছোট একটা সময়- প্রতিটা দিন, প্রতিটা ঘন্টা, প্রতিটা মুহূর্তের জন্য খুঁতখুঁতে হতে হবে। সিলেক্টিভ হতে হবে। লাইফে এন্টারটেইনমেন্ট, ফ্রেন্ডশিপ, আড্ডা, সিনেমা, খেলা দেখার দরকার আছে। তবে এগুলা কখনোই লাইফের ৮০% বা ১০০% হতে পারে না। তাহলে লাইফের ৮০% টার্গেটই এচিভ হবে না। কারণ তুমি তোমার ফিউচারকে যেভাবে ইগনোর করবে, প্রোকাস্টিনেট করবে, পাশ কাটাবে। তোমার ফিউচারও তোমাকে একজাক্টলি সেভাবে ফাঁকি দিয়ে অন্যের ঘাড়ে ঝুলে পড়বে।
.