বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করলেন। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ( বি ইউ পি) একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সভায় এই ডিগ্রির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।  

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেনারেল আজিজের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ‘বর্ডার ম্যানেজমেন্ট চ্যালেঞ্জেস অব বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি): ইস্যুস ইন ট্রান্সন্যাশনাল থ্রেট’। জেনারেলের আজিজের গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সলর প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

এছাড়া, বহিরাগত পরীক্ষক ছিলেন পশ্চিমবংগের কৃষ্ণনগর কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডঃ মিতা ব্যানার্জি। আভ্যন্তরীণ পরীক্ষক ছিলেন, বি ইউ পির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এম এ কাশেম, জাহাংগিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ডঃ  রাশেদ-উজ-জামান। জেনারেল আজিজ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটী অব প্রফেশনালস (বি ইউ পি) এর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের পি এইচ ডির শিক্ষার্থী ছিলেন। 

জেনারেল আহমেদ ১৯৬১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জনাব আবদুল ওয়াদুদ বিমান বাহিনীতে কাজ করতেন এবং তাঁর মাতার নাম রেনুজা বেগম। তিনি মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালের ১০ ই জুন বিএমএ লং কোর্সে আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ মিরপুর থেকে স্নাতক, ডিফেন্স স্টাডিজে স্নান্তোকোত্তর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (টেকনিক্যাল) এবং আমেরিকান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে এম বি এ ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর একে একে তিনি সেনাবাহিনীর উচ্চতম স্থান জেনারেল পদে উন্নীত হন ২৫শে জুন ২০১৮ এবং সেনা প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৪০ টি দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে ৫৪টি মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি সামরিক সহযোগিতা ও সহায়তার জন্য সৌদি আরবের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরে অবদান রাখেন যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশী সেনা মোতায়েন রয়েছে। বাংলাদেশ রাইফেলস বিদ্রোহের পরে তৎকালীন বিডিআর বাহিনীকে স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে জেনারেল আজিজ আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নবগঠিত বিজিবি’র আস্থা ফিরিয়ে আনতেও তিনি গুরুত্ত্বপূর্ন ভূমিকা রাখেন।

ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তিন পুত্র সন্তানের জনক। 

জেনারেলের আজিজের পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই তোফায়েল আহমেদ জোসেফ একজন  শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে হাইকোর্ট থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন, ২০১৭ সালে কোনও স্বাস্থ্যগত কারণ ছাড়াই বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত অবস্থায় ২০ মাস তাকে হাসপাতালে রাখার সুযোগ করে দেয়া হয়, এরপর বিষয়টি প্রকাশিত হলে তাকে কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিশেষ ক্ষমা প্রদান করে তাকে মুক্তি প্রদান করেন। মোস্তফা হত্যাকাণ্ডে তার আরও দুই ভাই হারিস এবং আনিস আহমেদের নাম সংযুক্ত ছিল, তারা দুইজনই পলাতক। ১৯৯০ এর দশকে হামলাকারীরা তার চতুর্থ  ভাই সাইদ আহমেদ টিপুকে গুলী করে হত্যা করে।

তথ্যসূত্রঃ ঢাকা ট্রিবিউন, বণিক বার্তা, ডেইলি স্টার, উইকিপেডিয়া 

SHARE THIS ARTICLE