ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ৬৬ হাজারের বেশী গৃহ প্রদান

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ গতকাল শনিবার বাংলাদেশে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১ হাজার ১৬৮ কোটী টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৬ হাজার ১৮৯টি বাড়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রদান করা হয়। এই উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেনসের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন ঘোষণা করে শেখ হাসিনা বলেন, “সবার জন্য নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করাই হবে মুজিব বর্ষের লক্ষ্য, যাতে দেশের প্রত্যেক মানুষ উন্নত জীবন যাপন করতে পারেন। দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর দিতে পারার চেয়ে বড় কোনো উৎসব আর কিছুই হতে পারে না।”

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘এভাবেই মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পুরো বাংলাদেশের গৃহহীনদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া হবে, যাতে দেশের একটি লোকও গৃহহীন না থাকে, যাতে তাঁরা উন্নত জীবন যাপন করতে পারেন, আমরা সে ব্যবস্থা করে দেব। যাঁদের থাকার ঘর নেই, ঠিকানা নেই, আমরা তাঁদের যেভাবেই হোক, একটা ঠিকানা করে দেব।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়ি পাচ্ছে আরো এক লাখ গৃহহীন পরিবার


শেখ হাসিনা আরো বলেন, মুজিব বর্ষের আরো অনেক কর্মসূচি ছিল। সেগুলো করোনার কারণে করা যায়নি। তিনি বলেন, “তবে করোনা একদিকে আশীর্বাদও হয়েছে। কারণ, আমরা এই একটি কাজের দিকেই নজর দিতে পেরেছি। আজকে এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও সীমিত আকারে আমরা করে দিচ্ছি এবং একটা ঠিকানা আমি সব মানুষের জন্য করে দেব। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, যখন এই মানুষগুলো ঘরে থাকবেন, তখন আমার বাবা এবং মা—যাঁরা সারাটা জীবন এ দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন, তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে।’

গৃহহীনদেরকে ৬৬ হাজার ১৮৯টি বাড়ি প্রদান ছাড়াও ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন আশ্রয়ণ প্রকল্প মুজিব বর্ষ উদযাপনকালে ২১টি জেলায় ৩৬টি উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্পের অধীনে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলা গ্রাম, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুর গ্রাম, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপকারভোগীদের মধ্যে বাড়ির চাবি ও দলিল হস্তান্তর করেন।

ইতিমধ্যে সারা দেশের ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ তালিকা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণ ও পরিবার পুনর্বাসনের কার্যক্রম চলবে। উপকারভোগী প্রতিটি পরিবারকে ২ শতক জমির রেজিস্ট্রি মালিকানা দলিল হস্তান্তরসহ নতুন খতিয়ান ও সনদ হস্তান্তর করা হয়। প্রতিটি জমি ও বাড়ির মালিকানা স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দুই রুমের সেমি পাকা টিনশেড বাড়িতে রান্নাঘর, টয়লেট, বারান্দাসহ বিদ্যুৎ ও পানির নাগরিক সুবিধা রয়েছে। গ্রোথ সেন্টারের পাশে হওয়ায় প্রকল্প এলাকায় পাকা রাস্তা, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা ও বাজার রয়েছে।

SHARE THIS ARTICLE