আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ মানবপাচারের অভিযোগে লন্ডনে একটি আলবেনিয়ান গ্যাংককে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ)। গ্রেপ্তারকৃত এই দলে পাঁচ সন্দেহভাজন ছাড়াও সারে থেকে হর্লি এবং অক্সফোর্ডশায়ারের ডিডকোট রয়েছেন। ভ্যান ও লরিতে করে কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পার করে দেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জাতীয় অপরাধ সংস্থা এবং মেট ও হোম অফিসের শতাধিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে পরিচালিত অভিযানে পুরেল থেকে তিনজন, মুরডেনে আটককৃত একজন এবং ক্রয়েডন অঞ্চল থেকে অপর একজনসহ মোট সাত সদস্যকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে প্রায় ৩০,০০০ নগদ অর্থও জব্দ করা হয়েছে। যদিও এনসিএ বলেছে, এই গ্যাংয়ের কার্যক্রমে প্রায় লক্ষাধিক পাউন্ড আয় হয়ে থাকে।
সন্দেহভাজনদের সবাইকে অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশে সাহায্য করা এবং অর্থ পাচার অপরাধের সন্দেহের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এনসিএর কমান্ডার রিচার্ড হ্যারিসন বলেছেন, এই চক্রটি বেআইনী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের নিরাপত্তার দিয়েছিল এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করেছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এই গ্রেপ্তার অভিযানের ফলে সম্ভাব্য কয়েক শতাধিক লোককে যুক্তরাজ্যে অবৈধ পথে পাচারের জন্য দায়ী সংগঠিত অপরাধচক্রকে প্রতিহত করবে। নেটওয়ার্কটি দাবি করেছে, তারা বিভিন্ন যানবাহন ভাড়া করে দক্ষ গাড়িচালকের মাধ্যমে বিশেষ ভাবে অভিবাসীদের তাদের পরিষেবা দিত, তবে এজন্য তারা বিপুল পরিমাণে টাকা নিত।’
এনসিএর উপপরিচালক আন্দ্রেয়া উইলসন বলেছেন, “এসব পাচারকারীরা এনসিএর টার্গেট তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এটি এমন এক ধরনের অপরাধমূলক অপরাধ যাদের কাছে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই, তারা অর্থের লাভের জন্য মানুষকে শোষণ করতে দ্বিধাবোধ করে না।”
“আমাদের কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্য এবং বিদেশী অংশীদারদের সহায়তায় পাচারকারীদের সন্ধান, ব্যবসায়িক পরিকল্পনাকে বিঘ্নিত ও ভেঙে ফেলে বিচারের সম্মুখীন করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন”, যোগ করেন আন্দ্রেয়া উইলসন।
জানা গেছে, ইউরোপ জুড়ে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পাচারের আগে অবৈধভাবে অভিবাসীদের বিশেষভাবে ভাড়া করা গাড়িতে বা বিভিন্ন আসবাবের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেক অভিবাসী অবৈধভাবে ব্রিটেনে ঢুকতে ২৫ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত পাচারকারীদের পরিশোধ করার কথা ছিল। যাদের অনেকে একবার ব্রিটেনে প্রবেশ করতে পারলে সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে কাজ করে অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন।
অভিযানটি মূলত ব্রিটেনে চলমান আলবেনীয় অপরাধ দলগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক গ্রেপ্তার অভিযানের একটি সর্বশেষ ঘটনা।
এনসিএ পূর্বে বলেছিল, তারা বিশ্বাস করে আলবেনিয়ান সংগঠিত অপরাধচক্রগুলি যুক্তরাজ্যের প্রতিটি বড় শহরে অবৈধ কোকেনের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাশাপাশি মানব পাচারের মতো অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত।