শনিবার থেকে পবিত্র হজ্ব শুরু হয়েছে

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ শনিবার থেকে সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজীরা মক্কায় উপস্থিত হবেন। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি মানুষ হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এবার ৬০ হাজার মানুষ হজে অংশ নিচ্ছেন।

রবিবার ৮ জিলহজ্ব মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন হাজীরা। এদিন দিবাগত রাত থেকেই হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবে। ১৯ জুলাই সোমবার ৯ জিলহজ আরাফার দিন পালিত হবে পবিত্র হজ। পরদিন কোরবানির মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত হবে।

হাজীদের নিরাপত্তা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবার প্রথমবারের মত হজ করার অনুমতিপ্রাপ্তদের তাসরিহ কার্ডের সাথে স্মার্ট কার্ড সংযুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। ১৫০ টি দেশের ৬০ হাজার সৌভাগ্যবান মানুষের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশিও এবার হজ করার সুযোগ পেয়েছেন।

Pilgrims arrive in Mina on the day of 'Tarwiyah' | Arab News PK

সোমবার আরাফার দিন মসজিদে নামিরা হজের খুতবা দিবেন মসজিদুল হারামাইনের ইমাম ও খতিব। বাংলাসহ মোট দশটি ভাষায় সে খুতবা অনুবাদ করে প্রচার করা হবে।

হজ ইসলামের পাঁচটি আরকান বা স্তম্ভের পঞ্চমটি। হজের  আভিধানিক অর্থ ‘কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করা’, ‘সংকল্প করা’ বা ‘চক্রাকারে প্রদক্ষিণ করা’। শরিয়তের পরিভাষায় নির্দিষ্ট মাসের নির্দিষ্ট সময়কালে কা’বা ঘর প্রদক্ষিণ, আরাফাত ময়দানে অবস্থান, সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী স্থানে গমনাগমন, মিনায় অবস্থান প্রভৃতি কার্য  হযরত মুহাম্মাদ (স.) কর্তৃক নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সম্পাদন করার নামই হজ্জ।

হজ্জ মুসলমানদের জন্য ফরজ। শরিয়ত অনুযায়ী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ্জ করা অবশ্য কর্তব্য, যদি তার পক্ষে সম্ভম হয় (৩ঃ৯৭)।

হজ পালনের শর্ত হলো: প্রাপ্ত বয়স, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, পথের নিরাপত্তা এবং ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের সদস্যবৃন্দের ভরণ-পোষণের নিশ্চয়তা। মহিলাদের ক্ষেত্রে স্বামী বা অবিবাহযোগ্য কোনো আত্মীয়কে সহযাত্রী করা আবশ্যক।

জীবদ্দশায় হজ্জ করতে পারেনি এমন ব্যক্তি বদলি হজ্জের ওয়াসিয়াত করতে পারে। সে মারা গেলে তার সম্পত্তি থেকে কাফন-দাফনের খরচ ও তার ঋণ থাকলে তা পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তার এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা হজের  ব্যয় নির্বাহ সম্ভব হলে ওয়ারিশদের ওপর তার পক্ষে হজ করা ওয়াজিব হয়।

Arafat & Muzdallifah (9th Zilhaj) – #Hajj – hajj guide – blog

হজের ফরজ হলো: ইহরাম; আরাফাতে ওয়াকুফ ও তাওয়াফ আল-ইফাদা ১০, ১১ বা ১২ যুল হিজ্জা তারিখে তাওয়াফ আল-ইফাদা করা হয়, তবে প্রথম দিবসেই এটি সম্পন্ন করা শ্রেয়; উপর্যুক্ত ফরজ কাজগুলি নিয়মানুযায়ী পরপর সমাধা করা।

হজ্জের ওয়াজিব হলো: মুযদালিফাতে উকুফ, সাঈ, রাময়ি (অর্থাৎ  মীনাতে পাথর নিক্ষেপ), হালক (কেশ মুন্ডন) বা তাকশির (কেশ ছোট করা) এবং কিরান ও তামাত্তু (কুরবানি করা)। ইহরাম, তাওয়াফ ও উকুফ সংক্রান্ত আরও কিছু কাজ ওয়াজিব বলে বিবেচিত হয়।

হজ্জ তিন প্রকারে সম্পন্ন করা যায়:  ইফরাদ, অর্থাৎ শুধুমাত্র হজ্জের ইহরাম করা ও উমরাহ্ ব্যতীত হজ করা; কিরান, অর্থাৎ উমরা ও হজ্জ উমরার ইহরাম এক সঙ্গে করা; উমরা সম্পাদন করে পরে হজ্জ করতে হয়; তামাত্তু, অর্থাৎ প্রথমে শুধু উমরার ইহরাম করা ও উমরা শেষে ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়া এবং পরে  পুনরায় হজ্জের ইহরাম করা ও হজ্জ সম্পাদন করা।

হজ্জের অনুষ্ঠানগুলি পবিত্র পরিবেশ ও অবস্থার মধ্যে সম্পন্ন করতে হয় বিধায় ইহরাম অপরিহার্য। মক্কা থেকে দূরে যাদের বাড়ি তাদেরকে মক্কা যাওয়ার পথে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে সেখানেই ইহরাম সম্পন্ন করতে হয়। এই নির্দিষ্ট স্থানকে বলা হয় ‘মীকাত’। হজের  দিন ছাড়া অন্যদিন গেলে উমরা বা ছোট হজ  পালন করতে হয়। উমরার জন্য কোনো দিন-তারিখ নির্দিষ্ট নেই। কা’বা ঘরে সাতবার তাওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ সম্পন্ন হলেই উমরা সম্পন্ন হয়।

SHARE THIS ARTICLE