আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ চীনে কোণঠাসা হচ্ছে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়। শিক্ষা দেওয়ার নামে তাদের ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ নিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। তবে এবার আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে।
বলা হচ্ছে, প্রায় ১৫ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি শিবিরে আটকে রেখে বর্বর নির্যাতন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করে বিক্রি এবং নারী-পুরুষদের সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে। আর উইঘুরদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কালোবাজারে বিক্রি করে লাখ লাখ ডলার আয় করছে চীন।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট ‘উইঘুর ফর সেল (উইঘুর বিক্রির জন্য)’ নামের প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে। এমন খবরে চীনের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দিশিবিরে আটক উইঘুর মুসলিমদের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তিব্বতি এবং ফালুন গং গোষ্ঠীর বন্দিদের থেকেও জোর করে অঙ্গ সংগ্রহ করা হচ্ছে। উইঘুরদের লিভার বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ ডলারে (এক কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রায়)। এর চেয়ে কিছু কম দামে মিলছে কিডনি।
সেখানে দাবি করা হয়েছে, চীনের চোরাবাজারে বিক্রি হতে থাকা এই সব চোরাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অধিকাংশই উইঘুর মুসলমানদের শরীর থেকে বের করে আনা হচ্ছে।
এর আগেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে। সরকারের মদতেই জোর করে উইঘুর মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের হার্ট, কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বলে অভিযোগ তুলেছিল জানিয়েছে ‘চায়না ট্রাইবুনাল’।
যদিও বরাবরই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে চীন। ২০১৫ সালেই গবেষণার জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের অঙ্গ নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে বলে পালটা দাবি করে বেইজিংয়ের।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীনের বন্দিশিবিরে প্রায় ২০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ওই বন্দিদের মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে শি জিনপিং প্রশাসনের বিরুদ্ধে। মহিলা বন্দিদের ধর্ষণের পাশাপাশি নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগের মতো নানা অভিযোগ তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
জাতিসংঘে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৪৩টি দেশ। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে জাতিসংঘে চীনা দূত ঝাং জুন বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। চীনের ক্ষতিসাধন করার জন্য এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। শিনজিয়াংয়ে প্রচুর উন্নতি হচ্ছে এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে তারা গর্বিত।’