সাতক্ষীরায় একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যা: সিআইডির চার্জশিট

আইরিশবাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় একই পরিবারের চার জনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলা দায়েরের এক মাস চারদিন পর সিআইডি চার্জশিট আদালতে দাখিল করে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে খুলনা বিভাগীর সিআইডির করা ব্রিফিংয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিচালক শেখ ওমর ফারুক।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চার জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। তারা হলেন— শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৫), ছেলে সিয়াম হোসেন (১০) ও মেয়ে তাছনিম (৮)। হত্যাকাণ্ডের পর ভুক্তভোগী সাবিনার মা বাদী হয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণের পর সিআইডি ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। সিআইডি তদন্তের মাধ্যমে মামলার মূল আসামি রাহানুরকে গ্রেপ্তারসহ এ ঘটনার সম্পূর্ণ রহস্য উদঘাটন করতে সমর্থ হয়। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে নিয়মিত ফেনসিডিল সেবনের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত রাহানুর। তিনি দীর্ঘদিন ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ (ডিসপেন-২) সেবন করে আসছেন। এক সময় ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলও খাটেন।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রীর সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়। সে সময় বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে অবস্থান করেন রাহানুর। ভাবি সাবিনা মাঝে-মধ্যে টাকার জন্য তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ এবং বেকার জীবনে ভাবির দুর্ব্যবহারের কারণে এক সময় ভাই-ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাহানুর। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় একটি দোকান থেকে দুই বোতল কোমল পানীয় (স্পিড) কিনে তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে সেই পানীয় তিনি তার ভাই, ভাবি, ভাতিজি ও ভাতিজাকে খেতে দেয়। সেটি খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়লে গত ১৫ অক্টোবর দিনগত রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে চাপাতি দিয়ে প্রথমে ভাই এবং পরবর্তীতে ভাবীসহ বাকিদের হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর রাহানুর হত্যার আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। অবশেষে রাহানুরের সকল অপচেষ্টা বিফল হয় এবং সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে এ মামলার রহস্য উদঘাটন করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ রক্ত মাখা কাপড়ও উদ্ধার করা হয়েছে। সিআইডি ঘাতক রাহানুরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই পূর্বক পুরো ঘটনাটি উদঘাটন করে। গত ২১ অক্টোবর রাহানুর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

এই ঘটনায় মামলা দায়েরের এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় গত ২২ নভেম্বর সিআইডি চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে সমর্থ হয় বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে।

SHARE THIS ARTICLE