সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে কারখানা পরিদর্শনে নামছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডসে গত ৮ জুলাই সংঘটিত মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে  মৃত্যু হয় ৫২ জনের। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ঘটনার পর দেশের শিল্প খাতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ওই ঘটনার পর থেকেই দেশের শিল্প-কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে  তত্পর হয়ে  উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর  রহমানকে সভাপতি করে এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার নেতৃত্বে  কমিটির সদস্যরা শিল্প-কারখানাগুলোয় কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে  পরিদর্শন কার্যক্রম  চালাবেন। এছাড়া কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়নের দিক থেকে মুখ্য ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর  কার্যালয়ের আওতাভুক্ত সংস্থা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।পরিদর্শন কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতিও  এরই মধ্যে প্রায় শেষ পর্যায়ে।সবকিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে বিডা সূত্রে  জানা  গিয়েছে।

এ কার্যক্রমের আওতায় পরিদর্শনের জন্য এরই মধ্যে ৪৬ হাজারের বেশি শিল্প-কারখানার তালিকা সংগ্রহ করেছে জাতীয় কমিটি। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ হাজার কারখানায় পরিদর্শন করা হবে। পরে ধাপে ধাপে অন্য কারখানাগুলোরও কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা যাচাই করা হবে।

হাসেম ফুডসের দুর্ঘটনার পর পরই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেশের শিল্প-কারখানাগুলোয় পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করা নিয়ে একটি অনুশাসন জারি করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষ ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে বিডার নেতৃত্বে অবিলম্বে সব শিল্প-কারখানা সরেজমিন পরিদর্শনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিদর্শন চলাকালে শিল্প-কারখানাগুলোর অবকাঠামোগত পরিস্থিতি এবং অগ্নি ও অন্যান্য দুর্ঘটনা নিরোধে বিদ্যমান প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। এ পর্যালোচনার ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্বও সুনির্দিষ্টভাবে বিডাই পালন করবে। অনুশাসনে এ নিয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানানো হয়।

ওই অনুশাসনের পরই সালমান এফ রহমানকে সভাপতি করে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের তথ্য জানানো হয়। ২৪ সদস্যের কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব। অন্য সদস্যরা হলেন বাণিজ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকার সংসদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন/পৌরসভার মেয়র, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, বাণিজ্য সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব, শিল্প সচিব, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন), গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, এফবিসিসিআই সভাপতি ও বিজিএমইএর সভাপতি।

কমিটির জন্য নির্ধারিত কাজের মধ্যে রয়েছে সরেজমিন পরিদর্শনে পাওয়া পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ; কলকারখানা, সংশ্লিষ্ট আইনি কর্তৃপক্ষগুলোর কার্যক্রম পরিবীক্ষণ; কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোসংক্রান্ত প্রায়োগিক আইন, বিধি, নীতিমালা, গাইডলাইন ও নির্দেশনা পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি, নীতিমালা, গাইডলাইন, নির্দেশনা পরিপালনের বিষয়টি পরিবীক্ষণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কমিটি।

SHARE THIS ARTICLE