ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের সম্পত্তির হিসেবে অসঙ্গতি

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ ব্রিটিশ সরকারের কাছে স্ত্রী ও তার পরিবারের বিপুল সম্পত্তির পরিমাণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করার অভিযোগ উঠেছে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের বিরুদ্ধে। দ্য গার্ডিয়ানের নিজস্ব তদন্তে এ অসঙ্গতির বিষয়টি উঠে আসে। ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী নিজের পাশাপাশি নিকটাত্মীয়দের আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সরকারের কাছে উল্লেখ করতে হয় ব্রিটেনের সব মন্ত্রীকে। আত্মীয়দের তালিকায়, বাবা-মা, ভাই-বোনের পাশাপাশি মন্ত্রীদের জীবনসঙ্গী এবং তার পরিবারের সম্পত্তির খতিয়ানও জমা দিতে হয় সরকারের কাছে। মন্ত্রী বা তার সম্পর্কিতদের কারো আর্থিক লেনদেনের সূত্রে উদ্ভূত কোনো সমস্যার জেরে নাগরিক পরিষেবায় যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্যেই এ ব্যবস্থা।

ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হলেন নারায়ণমূর্তির জামাই, পদত্যাগ পাকিস্তানি  বংশোদ্ভূত সাজিদ জাভিদের | Narayana Murthy Son In law Rishi Sunak named new  finance minister of UK

ঋষির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শুধু স্ত্রী ছাড়া পরিবারের বাকিদের সম্পত্তির খতিয়ান জমা করেননি এবং স্ত্রীয়ের ক্ষেত্রেও সম্পূর্ণ তথ্য দেননি। ২০০৯ সালে ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির কন্যা অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে বিয়ে হয় ঋষির। ইনফোসিসের পরিচালকমন্ডলীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত অক্ষতা। বাবার সংস্থায় কমপক্ষে ৪৩ কোটি পাউন্ডের শেয়ার রয়েছে তার। সেই সূত্রে ব্রিটেনের অন্যতম বিত্তশালী মহিলা তিনি। অথচ ঋষির জমা দেয়া তথ্য বলছে, ব্রিটেনে শুধু একটি ছোট বাণিজ্যিক সংস্থা চালান অক্ষতা! ঋষির স্ত্রী এবং তার পরিবারের কাছে ইনফোসিসের বিপুল অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। যার সামগ্রিক পরিমাণ ১শ’ ৭০ কোটি পাউন্ডের কাছাকাছি। শুধু ব্রিটেনেই ওই সংস্থাটিতে কাজ করেন কয়েক হাজার মানুষ। সরকার এবং একাধিক নাগরিক সংগঠনের সঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে চুক্তিবদ্ধভাবে কাজ করেছে সংস্থাটি। তবে এর কিছুই নাকি উল্লেখ করেননি ঋষি।

আরও অনেক কিছুই ঋষি গোপন করে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ঋষির বিরুদ্ধে। যেমন, অ্যামাজন এবং মূর্তিদের একটি লগ্নিকারী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ভারতে ৯০ কোটি পাউন্ডের একটি কার্যক্রম রয়েছে। ‘জেমি অলিভার’ এবং ‘ওয়েন্ডি’জ বার্গার’ ভারতে যারা চালায় ব্রিটেনের সে সংস্থাটিতেও অক্ষতার শেয়ার রয়েছে। এ ছাড়াও ব্রিটেনের আরো ৫টি সংস্থার সঙ্গে তিনি যুক্ত। এসব সংস্থায় তিনি ডিরেক্টর পদে রয়েছেন কিংবা সরাসরি সেখানকার শেয়ারহোল্ডার হিসেবে। সেই তালিকায় অন্যতম ইটন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য টেলকোট প্রস্তুতকারী একটি সংস্থা।

তবে ব্রিটেনের ট্রেজারির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়ম মেনেই সরকারের কাছে নিজের এবং তার পরিবারিক সম্পত্তি বিষয়ক সমস্ত তথ্য পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ঋষির তরফ থেকে। দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, বিষয়টি পর্যোলোচনার দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাও এ নিয়ে কোনো আপত্তি প্রকাশ করেননি। তিনি আরও জানান যে, সম্পত্তির বিষয়ে কী কী এবং কতটা উল্লেখ করতে হবে সে সিদ্ধান্ত মন্ত্রীরা নেন না। এর দায়িত্বে থাকেন সরকারি আমলা বা নির্দিষ্ট উপদেষ্টারা। ফলে এভাবে সরাসরি কোনো মন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলা উচিত নয়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

SHARE THIS ARTICLE