এসএসসি জুনে এবং এইচএসসি জুলাই আগস্টে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে ফেব্রুয়ারিতে

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আগামী জুনে এসএসসি এবং জুলাই-আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে এর আগে এসএসসি ও এইচএসসি স্তরের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস পুনর্বিন্যস্ত করা হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত ১৬ মার্চ প্রত্যক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি। সিলেবাস কাস্টমাইজ (কাটছাঁট) করার কার্যক্রম চলছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে জানা যাবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে পড়ানোর উদ্যোগ নেব। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ২০২১ সালের জুন নাগাদ এই পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করব। স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার চেষ্টা করব।’

জিপিএ থাকবে না জেএসসি-জেডিসির সনদে : করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এবার পরীক্ষা ছাড়াই জুনিয়ার স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে তোলা হচ্ছে বলে সনদপত্রে কোনো জিপিএ থাকবে না।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এ বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেছে। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের কাজও শেষ। সব শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ সনদ দেওয়া হবে, তবে নম্বরপত্র দেওয়া হবে না।

এইচএসসির ফল জানুয়ারিতে : এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে নতুন বছরের শুরুতে; তবে সে জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এইচএসসির ফল তৈরি আছে। অধ্যাদেশ জারি করা মাত্রই ফল দেওয়া হবে।

জানা গেছে, জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে।

১২ দিনে বই বিতরণ : নতুন বছরের প্রথম দিন স্কুলে স্কুলে বই উৎসব না করে এবার ১ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেবে সরকার। এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ ডিসেম্বর বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বই বিতরণ বড় উৎসবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে তা এক দিনে করা হচ্ছে না। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১২ দিনে বই বিতরণ করা হবে। একেকটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা তিন দিন (স্কুলে) এসে বই নিয়ে যাবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। অভিভাবকদের এসে বই নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।

মাধ্যমিকে রোল নম্বর থাকবে না : এবার মাধ্যমিকের নতুন ক্লাসে ওঠা শিক্ষার্থীদের চিরাচরিত প্রথায় রোল নম্বর দেওয়া হবে না। শিক্ষামন্ত্রী জানান, বার্ষিক পরীক্ষার মেধাক্রমের ভিত্তিতে আগে যে রোল নম্বর দেওয়া হতো, তার বদলে শিক্ষার্থীদের আইডি নম্বর দেওয়া হবে। তবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা আগের ক্লাসের রোল নিয়ে পরের ক্লাসে উঠবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রোল নম্বরের কারণে একটি অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা হয়। আইডি নম্বর দিতে পারলে অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সৎ প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হবে। পুরো শিক্ষাজীবনে সে ওই আইডি নম্বর নিয়ে থাকবে, তাতে তাকে ‘ট্র্যাক’ করা যাবে, সে ঝরে পড়ছে কি না।

আগামী অর্থবছরে নতুন এমপিওভুক্তি : নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যে নীতিমালা জারি করা হবে। এর পরই আবেদন নেওয়া হবে

SHARE THIS ARTICLE